হুগলী

চিকিৎসায় গাফিলতি : চরম উত্তেতনা শ্রমজীবি হাসপাতালে

1000421324

গৌতম মুখোপাধ্যায় :

1000421189

1000421189

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে।

মৃতার পরিবার সূত্রে খবর , গত ২০ শে জুলাই শ্বাসকষ্ট নিয়ে শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৭০ ঊর্ধ্ব বিমলা দেবীকে। শ্রীরামপুর প্রভাসনগর এলাকায় তার বাড়ি। আজ সকালে মৃত্যু হয় ওই রোগীর । এর পরে হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা গাফেলোদের উপযোগ তুলে চড়াও হয় রোগীর পরিবারের লোকজন । পরিবারের অভিযোগ, গতকাল হাসপাতালে পক্ষ থেকে রুগী ভালো আছে বলে জানানো হয়। আজ সকালে হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয় বিমল দেবীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে তাকে ভেন্টিলেশনের দিতে হবে। আজ হাসপাতালে পরিবারের লোক এসে দেখেন রোগী আইসিইউতে আছেন তার কোন প্রকার সাড় নেই। কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে জানায়। এই খবর শুনেই হাসপাতালের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে রোগীর বাড়ির লোক। আই সি তে ঢুকে ডাক্তারদের ওপর ক্ষোভ উপরে দেয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া লাইভ দেখায় রোগীর সঙ্গে আসা এক ব্যক্তি তথা বিজেপি নেতা হরি মিশ্রা।ঘটনাস্থলে আসে শ্রীরামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা তৈরি হয়, দেহ নিতে অস্বীকার করে রুগীর বাড়ির লোক।

মৃতার বৌমা প্রতিমা সিং জানান, রবিবার আমার আমার শাশুড়িকে এখানে ভর্তি করি তার অক্সিজেনের সমস্যা ছিল। ভর্তির পর দু-তিন দিন ভালই ছিল। বুধবার শাশুড়িকে দেখতে এলে সে বাড়ি যাবার জন্য বলছিল। কাশির সমস্যা ছিল কিন্তু তবুও তাকে দই ভাত দিচ্ছিল। এর আগেও শাশুড়ি একবার সমস্যা হয়েছিল তখন অন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভালো হয়ে গিয়েছিল। এবারে শুধু শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল বলে আমরা এখানে নিয়ে এসে ভর্তি করেছিলাম। কি করে আর জানবো এখানে এলেই সব শেষ হয়ে যাবে। এটা সম্পূর্ণ চিকিৎসার গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে।

হরি মিশ্রা বলেন, আমার বন্ধুর মাকে শ্বাসকষ্ট সমস্যা হওয়ায় তাকে চার দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করি। চিকিৎসকরা বলেছিল দু-তিন দিন অবজারভেশনে রাখবো। তারপর ছেড়ে দেব। আজকে সকাল আটটার সময় জানতে পারি পেশেন্টের অবস্থা খুব খারাপ তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হচ্ছে। এসে দেখি মুখে একটা বড় পাইপ ঢুকানো রয়েছে। আমি তৎক্ষণা চিকিৎসকদে বলেছিলাম যে পেশেন্ট মারা গেছে। এই হাসপাতাল মানুষের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করছে।

শ্রমজীবী হাসপাতালে সহ-সভাপতি গৌতম সরকার জানান , রুগীকে যেদিন ভর্তি করা হয় সেদিন শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল সেটা রোগীর পরিবারকে জানানো হয়েছিল। আইসিউতে ভর্তি করার সময় রোগীর পরিবারকে বলা হয়েছিল রোগীর অবস্থা খারাপ রয়েছে তাকে যে কোন সময় ভেন্টিলেশনে দিতে হতে পারে। আপনারা মনে করলে তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন। দুর্ভাগ্যবশত আজ সকালে রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর এক নেতা এসে আই সি ইউ তে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং চিকিৎসকদের গালিগালাজ করে। এবং ফেসবুক লাইভ করে। যদি চিকিৎসার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তাহলে তিনি থানায় বা অন্য কোথাও অভিযোগ জানাতে পারতেন এভাবে ফেসবুক লাইভ করা ঠিক হয়নি।

ওই হাসপাতালে চিকিৎসক অনিক জানা বলেন, পরিবারের লোককে জানিয়েই ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়। তার নিউমোনিয়া, বুকের সমস্যা ও শ্বাসকষ্ট ও একাধিক সমস্যা ছিল । অক্সিজেনের মাত্রা কোনভাবে কমানো যাচ্ছিল না । অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স কমপ্লিট হলে তবেই পেসেন্টকে বাড়ি নিয়ে যে যেতে পারে তবে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী। ইসিজি করা হয় তখন জানা যায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই হাসপাতালের উপর চড়াও হয় ভাঙচুর চালায় ও চিকিৎসকদের উপর গালিগালাজ করে।